আমাজন জঙ্গলে নতুন প্রজাতির বিশালাকার সাপের সন্ধান

Amazon-Forest

আমাজন জঙ্গলে গবেষণাকাজ চালাতে গিয়ে একটি নতুন প্রজাতির সাপ শনাক্ত করেছেন বিজ্ঞানীরা। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের আসন্ন সিরিজ ‘পোল টু পোল উইথ উইল স্মিথ’-এর জন্য ভিডিও চিত্র ধারণ করতে গিয়ে তাঁরা এমন সাপের সন্ধান পেয়েছেন।

কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক আমাজন জঙ্গলের ইকুয়েডরের অংশে ভ্রমণে গিয়ে উত্তরাঞ্চলীয় সবুজ অ্যানাকোন্ডার (ইউনেকটেস আকায়ইমা) সন্ধান পান। তবে সাপের এ প্রজাতি আগে নথিভুক্ত ছিল না। তবে স্থানীয়ভাবে গুঞ্জন আছে, এটি পৃথিবীতে বেঁচে থাকা সবচেয়ে বড় প্রজাতির সাপ।

কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই বিজ্ঞানীরা বলেন, আমাজন জঙ্গলের ওই অংশে বড় প্রজাতির অ্যানাকোন্ডা দেখা গেছে বলে লোকমুখে খবর পাওয়ার পর তাঁরা সেখানে গিয়েছিলেন। ওয়াওরানি জনগোষ্ঠীর মানুষেরা তাঁদের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

কুইন্সল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানী অধ্যাপক ব্রায়ান ফ্রাই বিজ্ঞানীদের দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাইহুয়েরি ওয়াওরানি টেরিটরির বামেনো অঞ্চলে চালানো ১০ দিনের ওই অভিযানে শিকারি দলের সঙ্গে ছিলেন বিজ্ঞানীরা। এরপর তাঁরা নদীর অগভীর পানিতে কয়েকটি অ্যানাকোন্ডা খুঁজে পান। এগুলো শিকারের খোঁজে সেখানে লুকিয়ে ছিল।

অ্যানাকোন্ডা হলো বিশালাকারের সাপ। এরা বিষধর নয়। দক্ষিণ আমেরিকার উষ্ণ অঞ্চলগুলোর পানিতে বা পানির কাছে এ সাপের দেখা মেলে।

ফ্রাই মনে করেন, সাপগুলোর আকার অদ্ভুত। তিনি বলেন, তাঁর নেতৃত্বাধীন বিজ্ঞানীদের দলটি যে সাপগুলোর দেখা পেয়েছে, তার মধ্যে একটি স্ত্রী অ্যানাকোন্ডা ৬ দশমিক ৩ মিটার (২০ দশমিক ৭ ফুট) দীর্ঘ ছিল।

বিজ্ঞানীরা আরও বলেছেন, লোকমুখে তাঁরা জানতে পেরেছেন যে ওই এলাকায় ৭ দশমিক ৫ মিটার (২৪ দশমিক ৬ ফুট) দীর্ঘ এবং ৫০০ কিলোগ্রাম (১১০০ পাউন্ড) ওজনের অ্যানাকোন্ডা সাপ দেখা গেছে।

যুক্তরাজ্যের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের তথ্যানুসারে, সবুজ অ্যানাকোন্ডা হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ওজনের সাপ। একেকটি সাপের ওজন ২২৭ কিলোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। এগুলো ৮ দশমিক ৪৩ মিটার (২৭ দশমিক ৭ ফুট) পর্যন্ত লম্বা এবং ১ দশমিক ১১ মিটার (৩ দশমিক ৬ ফুট) পর্যন্ত চওড়া হতে পারে।

অপর দিকে রেটিকুলেটেড পাইথন বা জালি অজগর সাপ আকারে দীর্ঘ হলেও এটি হালকা। এ প্রজাতির সাপটি ৬ দশমিক ২৫ মিটারের বেশি লম্বা হতে পারে।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রায় এক কোটি বছর আগে অস্তিত্ব থাকা দক্ষিণাঞ্চলীয় সবুজ অ্যানাকোন্ডার সঙ্গে নতুন আবিষ্কৃত উত্তরাঞ্চলীয় সবুজ অ্যানাকোন্ডার অনেকটাই মিল আছে। এ দুই প্রজাতির মধ্যে পার্থক্য ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

উপরে