সিটির শিরোপা–ভাগ্য নির্ধারণ কি পরের ৩ ম্যাচেই

Manchester City

গত বছরের ডিসেম্বর। টানা চার ম্যাচে পয়েন্ট হারিয়ে ধুঁকছিল ম্যানচেস্টার সিটি। শিরোপা লড়াই তো বটেই, সেরা চারে থাকা নিয়েই সংশয়ে পড়ে গিয়েছিলেন সিটি কোচ পেপ গার্দিওলা। বলেছিলেন, ‘অবস্থা এমন যে পরের মৌসুমে আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগে না–ও খেলতে পারি।’

সেদিনের পর গত তিন মাসে ঘটেছে অনেক কিছু, কিন্তু সিটি লিগে আর কোনো ম্যাচ হারেনি। এর মধ্যে চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরেছেন আর্লিং হলান্ড–কেভিন ডি ব্রুইনা। এ দুজনকে পেয়ে সিটি যেন নিজেদের ‘ডিএনএ’ও নতুন করে ফিরে পায়। শুরু হয় আরেকটি অজেয় যাত্রা। এখন নিশ্চয় সেরা চারে থাকা নিয়ে সংশয়ী হওয়ার বদলে শিরোপা ধরে রাখা নিয়ে ভাবছেন গার্দিওলা। যদিও সিটির সামনের পথটা একেবারেই সহজ নয়। বিশেষ করে পরের তিনটি ম্যাচ। যে তিন ম্যাচ গড়ে দিতে পারে দলটির শিরোপা–ভাগ্য।

গত বছরের ৬ ডিসেম্বর অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে ১–০ গোলে হেরেছিল সিটি। লিগে সেটিই এখন পর্যন্ত সিটির সর্বশেষ হার। পরের ১২ ম্যাচের ১০টিতেই জিতেছে গার্দিওলার দল। অন্য দুই ম্যাচে ক্রিস্টাল প্যালেস ও চেলসির সঙ্গে ড্র করে তারা। এ সময় প্রিমিয়ার লিগে নিজেদের ভয়াল রূপ আবারও ফিরিয়ে এনেছে ক্লাবটি। এই মুহূর্তে শীর্ষে থাকা লিভারপুলের চেয়ে মাত্র ১ পয়েন্টে পিছিয়ে আছে সিটি। ২৭ ম্যাচে লিভারপুলের পয়েন্ট ৬৩, সিটির ৬২। সর্বশেষ গতকাল রাতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে শুরুতে পিছিয়ে পড়েও ঘুরে দাঁড়িয়ে ৩–১ গোলে জিতেছে তারা।

এর ফলে সামনে থাকা বড় চার বাধার প্রথমটি পেরিয়ে গেল তারা। এখন পরের তিন ম্যাচ এ জন্য হতে যাচ্ছে অগ্নিপরীক্ষার, যেখানে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ তিন দলের মুখোমুখি হবে তারা। ফলে এই তিন ম্যাচেই হয়ে যেতে পারে লিগ শিরোপা নির্ধারণও।
লিগে সিটির পরের ম্যাচটি লিভারপুলের বিপক্ষে।

ফোডেন–হলান্ড জুটিতেই ইউনাইটেডকে হারায় সিটি

এই ম্যাচটিতেই সুযোগ শীর্ষে ওঠারও। অ্যানফিল্ডে জিততে পারলে লিভারপুলকে টপকে শীর্ষে উঠে আসবে গার্দিওলার দল। তবে লিভারপুলের বিপক্ষে তাদেরই মাঠে কাজটি মোটেই সহজ হবে না। সাম্প্রতিক সময়ে দারুণ ছন্দে আছে ইয়ুর্গেন ক্লপের দল। চলতি মৌসুমে ঘরের মাঠে কোনো ম্যাচ হারেনি তারা। তাই লিভারপুলকে হারাতে হলে দারুণ কিছুই করতে হবে হলান্ড–ডি ব্রুইনাদের।  

সিটি যদি লিভারপুলকে হারানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ পার করতে পারে, তবে সেটি আত্মবিশ্বাস জোগাবে আর্সেনালের বিপক্ষে ম্যাচে। লিগে দারুণ ছন্দে থাকা গানাররাই সিটির এর পরের প্রতিপক্ষ। ম্যাচটা ইতিহাদে হলেও আর্সেনালকে হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই। সাম্প্রতিক সময়ে আর্সেনাল কেবল জিতছেই না, প্রতিপক্ষকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করে ছাড়ছে। শেষ তিন ম্যাচে প্রতিপক্ষকে হারানোর পথে মিকেল আরতেতার দল গোল করেছে ১৫টি। তাই লিভারপুলের পর এই দলটিকেও হারাতে পারলে শিরোপার পথে অনেক দূর এগিয়ে যাবে সিটি।

ক্লপ আর গার্দিওলা মুখোমুখি হচ্ছেন পরের ম্যাচে

ক্লপ আর গার্দিওলা মুখোমুখি হচ্ছেন পরের ম্যাচে

লিভারপুল–আর্সেনাল বাধার পর সিটি মুখোমুখি হবে অ্যাস্টন ভিলার। এই মৌসুমে সিটির এখন পর্যন্ত তিন হারের একটি কিন্তু এই ভিলা পার্কের দলটির সঙ্গেই। ফলে এ ম্যাচটি সিটির জন্য প্রতিশোধেরও। যে কারণে ম্যাচটি জিততে একটু বেশিই মরিয়া থাকবে গার্দিওলার শিষ্যরা। তবে লিভারপুল–আর্সেনালের পর অ্যাস্টন ভিলাকে হারানো মানে টানা চতুর্থ লিগ শিরোপায় এক হাত দিয়ে রাখা। কারণ, এরপর টটেনহাম ছাড়া সিটির সামনে আর কোনো বড় দল নেই। অতটুকু পথ পাড়ি দেওয়া খুব কঠিন কিছু হবে না সিটির জন্য।

লিভারপুলের জন্যও সিটি ম্যাচটি এখন সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জিং। ঘরের মাঠে সেই ম্যাচ জিততে পারলে শিরোপা জয়ের পথে অনেক দূর এগিয়ে যাবে তারা। এরপরও অবশ্য কঠিন কিছু ম্যাচ তাদের অপেক্ষায় থাকবে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, টটেনহাম এবং অ্যাস্টন ভিলার বিপক্ষে খেলতে হবে তাদের। তাই শীর্ষে থাকলেও আপাতত স্বস্তিতে থাকার সুযোগ নেই লিভারপুলের।

আর্সেনালের জন্যও পথটা একই রকম কঠিন। সিটির বিপক্ষে অগ্নিপরীক্ষার আগে তাদের মুখোমুখি হতে হবে চেলসির। এরপর ম্যাচ আছে টটেনহাম ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষেও। গত মৌসুমেও শেষ দিকে পয়েন্ট হারিয়ে শিরোপা লড়াই থেকে ছিটকে গেছে গানাররা। এবার তাই বাড়তি সতর্কতা নিয়েই মাঠে নামতে হবে আরতেতার দলকে।

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

উপরে