গাজায় খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৭০

 বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫

ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে গাজার খান ইউনুসে খাদ্য সহায়তা কেন্দ্রে অপেক্ষমাণ অন্তত ৭০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও কয়েক শতাধিক মানুষ। মঙ্গলবার সকাল থেকে একের পর এক ট্যাংক শেল, ভারী মেশিনগান ও ড্রোন হামলায় হতাহতের এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, হতাহতদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নাসের হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আহতদের বেশিরভাগেরই শরীর ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে, অনেককে শনাক্ত করাও সম্ভব হচ্ছে না।

গাজা সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসসাল জানান, ইসরায়েলি ড্রোন প্রথমে গুলি ছোড়ে, এরপর কয়েক মিনিটের মধ্যে ট্যাংক শেল ফাটানো হয়। এতে শতাধিক মানুষের মৃত্যু ও আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সেনারা যখন গুলি ছুড়ছিল তখন শত শত মানুষ খাদ্যের আশায় সেখানকার লাইনে দাঁড়িয়েছিল। অনেকের হাতে ছিল শুধুমাত্র আটার ব্যাগ।

ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস দায়ীদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ত্রাণ নিতে গিয়ে নিরীহ মানুষের মৃত্যু মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। এমন ঘটনা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’

জানানো হয়েছে, ২৬ মে থেকে গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF) নামে একটি বিতর্কিত ত্রাণ কার্যক্রম শুরু হলে থেকেই এ ধরনের হামলা চলছে। তিন সপ্তাহের মধ্যে এ পর্যন্ত ৩০০ জনের বেশি নিহত ও দুই হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন শুধুমাত্র খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টার সময়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) মঙ্গলবার জানিয়েছে, গাজায় ৩৬টি হাসপাতালের মধ্যে মাত্র ১৭টি আংশিক বা সীমিত পরিসরে চালু রয়েছে। প্রয়োজনীয় জ্বালানির অভাবে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা কার্যক্রম প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। সংস্থাটি অবিলম্বে গাজায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতির দাবি জানিয়েছে।

GHF বিতরণ কার্যক্রম নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থা। তারা বলেছে, এই কার্যক্রম ইসরায়েলের সামরিক উদ্দেশ্যকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এবং বহু অভিজ্ঞ মানবিক সংস্থাকে পাশ কাটিয়ে চালানো হচ্ছে।

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

উপরে