প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের পাপ-জুলুম দীর্ঘ

শনিবার, ০৪ অক্টোবর, ২০২৫

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের পাপ ও জুলুম অনেক দীর্ঘ বলে মন্তব্য করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার অনুগত র‌্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহকৃত জঙ্গিবিষয়ক খবর ভেরিফিকেশন ছাড়াই প্রচার করত ভারত-আমেরিকার যৌথ ওয়ার অন টেরর প্রজেক্টের অন্যতম ঠিকাদার পত্রিকা দুটি।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, গত কয়েক দিন ধরে প্রথম আলোর প্রকাশিত কয়েকটি ধর্ষণের সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে, যা আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ ব্যাপারে কোনো দ্বিমতের সুযোগ নেই যে, গোষ্ঠী বা ধর্মপরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে প্রমাণসাপেক্ষে ধর্ষক বা যে কোনো অপরাধীর সুষ্ঠু বিচার হতে হবে। কিন্তু ধর্ষণের সংবাদ করার ক্ষেত্রে প্রথম আলোর সাংবাদিকতার এথিক্স ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রশ্নের মুখে পড়েছে। লক্ষণীয়, ধর্ষণবিষয়ক সংবাদে ধর্ষক যখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ হয়, অথবা পাহাড়ি নৃগোষ্ঠীর কেউ হয়, তখন তার সামাজিক, পেশাগত ও গোষ্ঠীগত পরিচয় ব্ল্যাকআউট করে দেয় প্রথম আলো। অন্যদিকে, কোনো ধর্ষক মুসলিম সম্প্রদায়ের হলে তার পেশাগত ও গোষ্ঠীগত পরিচয়কে হাইলাইট করে কথিত প্রগতিশীল পত্রিকাটি। বিষয়টি এতই চাক্ষুষ যে, বোঝার জন্য গভীর কোনো বিবেচনারও দরকার পড়ছে না। প্রথম আলোর সাংবাদিকতা স্পষ্টত ইসলামবিদ্বেষ ও ওলামাবিদ্বেষে আক্রান্ত। এর নেপথ্যে প্রথম আলোর দীর্ঘ রাজনৈতিক ও মতাদর্শিক প্রকল্পও বিদ্যমান বলে আমরা মনে করি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ইসলামবিদ্বেষী হলুদ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ প্রথম আলো। ইন্ডিয়ান আধিপত্যবাদ ও আওয়ামী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে হেফাজতে ইসলামের রাজপথের আন্দোলন-প্রতিরোধকে প্রায়সময় ‘তান্ডব’ আখ্যা দিয়ে রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্টতার পরিচয় দিয়েছে পত্রিকাটি। এটি সেই পত্রিকা, যেখানে ২০০৭ সালে মুসলিম বিশ্বের প্রাণের স্পন্দন প্রিয় রাসুল হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন ছাপা হয়েছিল। বাংলাদেশবিরোধী ওয়ান ইলেভেনের কুশীলব হয়ে দেশের জনগণের ওপর দিল্লির দৈত্য চাপিয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছিল প্রথম আলো-ডেইলি স্টার গং। তাদের জঙ্গি-ন্যারেটিভ হাসিনার বিরোধী মত দমনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখত। ফলে সাজানো জঙ্গি মামলায় অসংখ্য নিরপরাধ প্র্যাকটিসিং মুসলিম তরুণের ঠাঁই হয় আয়নাঘরে। এই দীর্ঘ জুলুমের দায়ে পত্রিকা দুটির সম্পাদকের বিচার হতে হবে। তা ছাড়া ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের পক্ষে বয়ান উৎপাদনে বিভিন্ন সময় কলামও লিখেছিলেন।

তিনি আরও বলেন, এখন নিউ মিডিয়ার যুগ। মেইনস্ট্রিমে আগের মতো একতরফা জনমত গঠন ও জুলুমের বয়ান নির্মাণ আর সম্ভব নয়। সময় ও পট পরিবর্তন হয়েছে। তাই প্রথম আলোকে ইসলামবিদ্বেষী ফ্রেমিং পরিহার করে বস্তুনিষ্ঠ ও পক্ষপাতমুক্ত সাংবাদিকতা করতে হবে। এখন প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের বদলে যাওয়ার সময়।

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

উপরে