নির্বাচনের অপেক্ষায় বিনিয়োগকারীরা : আমীর খসরু

বৃহস্পতিবার, ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, দেশ দিন দিন নিচের দিকে যাচ্ছে এবং বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছেন। বিপ্লবের পর দেশে দ্রুত নির্বাচন না হলে গৃহযুদ্ধ হয়। 

বুধবার দুপুরে ঢাকায় একটি হোটেলে এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন। 

‘পোস্ট-জুলাই পলিটিক্যাল থটস : হুইচ ডিরেকশন বাংলাদেশ ইজ ওয়াকিং (জুলাই-পরবর্তী রাজনৈতিক ভাবনা : বাংলাদেশ কোন দিকে হাঁটছে)’ শীর্ষক ওই সেমিনারে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন।

অনেক আগেই নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে ফিরে না যাওয়ার কারণে দেশ দিন দিন নিচের দিকে যাচ্ছে। সরকার একদিকে, জনগণ আরেক দিকে। মাঝে কোনো সেতু নেই।

বিনিয়োগকারীরা নির্বাচনের অপেক্ষায় আছেন উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, দেশে নতুন বিনিয়োগ হচ্ছে না। নির্বাচনের পর তারা বিনিয়োগে নামবে। এখনো যারা আসছে, তারা মূলত পুরনো বিনিয়োগকারী।

বিএনপির এই নেতা বলেন, বিশ্বের যেসব দেশ বিপ্লব বা গণ-আন্দোলনের পর দ্রুত নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গণতন্ত্রে ফিরতে পেরেছে, তারা টিকে গেছে। আর যেসব দেশে দাবিদাওয়ার লড়াই চলতে থেকেছে, সেসব দেশে আজ গৃহযুদ্ধ চলছে, সমাজ ও অর্থনীতি বিধ্বস্ত।

জুলাই আন্দোলনের কৃতিত্ব নিয়ে দ্বন্দ্বের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আন্দোলনের কৃতিত্ব কে নেবে— এ নিয়ে যদি লড়াই চলে, তবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নেই। দেশে একদল মুক্তিযুদ্ধ বিক্রি করেছে, আরেক দল চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান বিক্রি করছে। জুলাই অভ্যুত্থান নিয়ে বিএনপি কোনো কৃতিত্ব নিতে চায় না, এটা বাংলাদেশের মানুষের অবদান।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন স্কুল অব লিডারশিপের যুগ্ম সম্পাদক গোলাম কাদের চৌধুরী।

স্কুল অব লিডারশিপের প্রতিষ্ঠাতা গোলাম রাব্বানী সেমিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন লন্ডনের নর্থামব্রিয়া ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আলিয়ার হোসেন। বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ সেমিনারে বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, দেশে ভয়ের রাজত্বের পতন হয়েছে, পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি।

তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল যেখানে শেখ হাসিনা থাকলে ক্ষমতার পরিবর্তন সম্ভব নয়— এই ধারণা রাষ্ট্রের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। বড় বড় ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশ— সবার মধ্যে এই ভয় ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল।

২০১৪ সালের নির্বাচনকে ‘সবচেয়ে ন্যক্কারজনক’ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনেরও কড়া সমালোচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা। আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিচারক, ভাইস চ্যান্সেলরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলরা সরকারের ইচ্ছামতো কাজ করেছেন, যা দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমও ভয়ের কারণে সত্য প্রকাশে সাহস দেখাতে পারেনি।

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

উপরে