ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদেরও ছাড়ছে না ইসরায়েল, নিহত আরও ৫৬

 মঙ্গলবার, ১৭ জুন, ২০২৫

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের হামলায় অন্তত ৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৩৮ জন ছিলেন খাদ্য সহায়তার জন্য লাইনে দাঁড়ানো মানুষ। 

মঙ্গলবার স্থানীয় চিকিৎসা সূত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গাজার হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন পরিচালিত বিতরণ কেন্দ্রগুলোতেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই সংস্থাটি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে চলে এবং ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কঠোর নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকাগুলোতে কাজ করে। কিন্তু এসব সংস্থার ত্রাণ বিতরণ স্থলেও ইসরায়েলি সেনারা গুলি চালানোয় এগুলোকে মানব হত্যা কেন্দ্র হিসেবে বর্ণনা করেছেন সমালোচকরা।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক বলেন, ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনার পদ্ধতি গাজাবাসীর ওপর ভয়ংকর ও অকল্পনীয় ভোগান্তি চাপিয়ে দিচ্ছে। গাজায় ২০ মাস ধরে চলা ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৫৫ হাজার ৩৬২ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে হাজার হাজার শিশু রয়েছে।

গাজার হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করার পর থেকে বিতরণকেন্দ্রের আশপাশে ৩০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই হাজারেরও বেশি।

রাফাহ শহরের ফ্ল্যাগ রাউন্ডঅ্যাবাউট এলাকায় খাদ্য সংগ্রহ করতে যাওয়া দুই ফিলিস্তিনি হেবা জৌদা ও মোহাম্মদ আবেদ অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান, সোমবার ভোর ৪টায় ইসরায়েলি সেনারা ত্রাণ নিতে আসা লোকজনের ভিড় দিকে গুলি চালায়।

হেবা জৌদা নামের ওই ফিলিস্তিনি বলেন, চারপাশ থেকে গুলি আসছিল। মানুষ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল, লুকিয়ে থাকার চেষ্টা করছিল। আমি গত এক সপ্তাহে কয়েকবার এই বিপজ্জনক যাত্রা করেছি শুধুই আমার পরিবারের জন্য খাবার আনতে। প্রতিদিন অবস্থা খারাপ হচ্ছে।

এছাড়া, উত্তরের গাজায় আরও তিনজন এবং গাজা সিটিতে দুইজন খাদ্য সংগ্রহে গিয়ে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন।

জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টার্ক বলেন, ইসরায়েল খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে এবং জরুরি সহায়তা বাধাগ্রস্ত করছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আমি অনতিবিলম্বে, নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করছি যে, কেন সাধারণ নিরীহ মানুষকে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে গুলি করে মারা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ইসরায়েলের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে যেভাবে মানুষকে হেয় করা হচ্ছে, তা ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ংকর অপরাধগুলোর স্মৃতি মনে করিয়ে দেয়।

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

উপরে