জার্মান চ্যান্সেলরের বিরুদ্ধে তরুণীদের বিক্ষোভ

 বুধবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৫

অভিবাসী ও শরণার্থীদের নিয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রেডরিখ মের্ৎসের ‘বর্ণবাদী ও বৈষম্যমূলক’ মন্তব্যের  প্রতিবাদে দেশটির রাজধানী বার্লিনে হাজারো মানুষ সড়কে নেমে বিক্ষোভ করেছেন। বার্লিনের ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন (সিডিইউ) পার্টির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত এ বিক্ষোভে সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষ অংশ নেন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন তরুণী। তারা রক্ষণশীল মের্ৎসের গত সপ্তাহের বিতর্কিত মন্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন- যেখানে তিনি দাবি করেছিলেন, “অভিবাসী ও শরণার্থীরা জার্মান শহরগুলোর চেহারায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।”

 তাৎক্ষণিক সমালোচনার মুখে পড়ার পর সোমবার মের্ৎস আবারও নিজের বক্তব্যের পক্ষে অবস্থান নেন এবং বলেন, “আপনারা আপনাদের মেয়েদের জিজ্ঞেস করুন আমি কী বোঝাতে চেয়েছি।”

সমালোচকদের মতে, এই বক্তব্যে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে অভিবাসী পুরুষরা যৌন হয়রানি বা অপরাধে বেশি জড়িত-যা তথ্য-উপাত্তের মাধ্যমে সমর্থিত নয় এবং একে ‘বর্ণবাদী’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

জার্মানির খ্যাতনামা পরিবেশ আন্দোলনকর্মী লুইজা নয়বাউয়ার, যিনি বিক্ষোভটির আয়োজন করেন, জনতার উদ্দেশে বলেন, “মের্ৎসের বক্তব্য একেবারেই অগ্রহণযোগ্য, বৈষম্যমূলক এবং সর্বাংশে বর্ণবাদী।”

এর আগে তিনি ইনস্টাগ্রামে লেখেন, “আমরা এই দেশে প্রায় চার কোটি মেয়ে ও নারী আছি। আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু আমাদের কাউকে ব্যবহার করা উচিত নয় বৈষম্যমূলক, বর্ণবাদী বা কষ্টদায়ক বক্তব্যের যুক্তি হিসেবে।”

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারীরা হাতে নানা প্ল্যাকার্ড বহন করেন, যেখানে লেখা ছিল- ‘বর্ণবাদই শহরের আসল সমস্যা’, ‘রঙিন শহরের জন্য মেয়েরা একত্রিত’, এবং ‘আমাদের কোনও শহরে এমন সমস্যা নেই, আমাদের সমস্যা হলো বর্ণবাদ’।  জনতার মধ্যে স্লোগানও ওঠে- ‘আমরাই শহরের চেহারা’, এবং ‘আমরাই সেই কন্যারা’। চ্যান্সেলর মের্ৎসের জোটসঙ্গী সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসপিডি) তার মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছে।

এসপিডির আইনপ্রণেতা রালফ স্টেগনার জার্মান দৈনিক টাগেসস্পিগেল-কে বলেন, “শহরের চেহারা নিয়ে চ্যান্সেলরের মন্তব্য সম্পূর্ণ ভুল সুরে বলা হয়েছে। তিনি মূলত ‘বিদেশিদের বের করে দাও’ মনোভাবকে উস্কে দিচ্ছেন, যা কোনও সমাধান দেয় না বরং সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করছে।”

তিনি আরও বলেন, “মের্ৎসের এমন মন্তব্য জোটের অভ্যন্তরীণ পরিবেশও খারাপ করছে, কারণ এসপিডির অনেক সদস্যই চ্যান্সেলরের বক্তব্যে গভীরভাবে ক্ষুব্ধ।

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

উপরে