ইরানে শিশুসহ সাতজনকে হত্যাকারীর ফাঁসি কার্যকর

বৃহস্পতিবার, ১২ জুন, ২০২৫

ইরানে ২০২২ সালের দেশব্যাপী সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলাকালে ১০ বছর বয়সী এক শিশুসহ সাতজনকে হত্যার অপরাধে এক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। বুধবার এ দণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছে দেশটির বিচার বিভাগ। ফরাসি বার্তা সংস্থা এ খবর জানিয়েছে।

খবরে বলা হয়, আব্বাস কুরকুরিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে ইজেহ শহরে এক বিক্ষোভের সময় গুলি চালানোর জন্য। এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল পুলিশি হেফাজতে মাহসা আমিনির মৃত্যুর পরে। মাহসা আমিনি ছিলেন একজন ইরানি কুর্দি, যাকে ইরানের নারীদের পোশাকের কঠোর নিয়ম ভাঙার অভিযোগে আটক করা হয়েছিল।

বিচার বিভাগীয় অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘মিজান’ জানিয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ খুজেস্তানের রাজধানী আহভাজের আদালতের দেওয়া রায় সুপ্রিম কোর্ট বহাল রেখেছে এবং ফাঁসির মাধ্যমে সাজা কার্যকর করা হয়েছে।

আদালত কুরকুরিকে ‘পৃথিবীতে দুর্নীতি’ ও ‘মোহারেবাহ’ (অর্থাৎ আল্লাহর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা) নামের প্রধান অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করেছে।

তারা তাকে ‘হত্যা ও জনসাধারণকে সন্ত্রস্ত করার উদ্দেশ্যে অস্ত্র চালানো’, ‘সামরিক অস্ত্র থেকে গুলি চালানো’ ও ‘বিপ্লবী দল গঠন ও যোগদানের’ অপরাধে দোষী মনে করেছে।

তার বিরুদ্ধে ইজেহ শহরে সামরিক অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছিল, যেখানে ১০ বছর বয়সী কিয়ান পিরফালাক সহ সাতজন নিহত হয়েছিল। কর্মকর্তারা এই গুলিবর্ষণকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে বর্ণনা করেছেন।

‘মিজান’ জানায়, বিচারে কুরকুরি অভিযোগ স্বীকার করেছেন এবং বলেছেন যে তিনি ‘সোশ্যাল মিডিয়ার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।

প্রতিবেদনে তাকে ‘কুখ্যাত অপরাধী’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে যার ‘গুলি, সশস্ত্র হামলা, সম্পত্তি ধ্বংস, মাদক ও অ্যালকোহল পাচারের মাধ্যমে জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার’ রেকর্ড রয়েছে।

গত ২০২২ সালের বিক্ষোভে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যসহ শত শত মানুষ নিহত হয় এবং হাজার হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ইরান তখন থেকে বিক্ষোভের সময় আটক বেশ কয়েকজনকে বিচার করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। ২০১৮ সালে ইসলামিক স্টেট গ্রুপের পক্ষ থেকে হামলা চালানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত নয়জনকে ফাঁসি দেওয়ার একদিন পরই কুরকুরির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সহ মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলির মতে, চীনের পরে ইরান বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বাধিক মৃত্যুদণ্ড কার্যকরকারী দেশ।

Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

উপরে